সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

ঘোড়াঘাট অস্থায়ী সেতুর উপর দিয়ে পানি প্রবাহে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন 

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 

ঘোড়াঘাট অস্থায়ী সেতুর উপর দিয়ে পানি প্রবাহে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন 

দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট এবং গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা সীমানায় অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রিজ ভেঙে নতুন সুপার স্ট্রাকচার ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। 

গত বছরের নভেম্বর পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরুর আগে পাশেই অস্থায়ী বিকল্প কাঠের সেতু নির্মাণ করে সওজ। তবে বর্ষা মৌসুম আসার আগেই নদীর হালকা পানি বৃদ্ধিতে অস্থায়ী সেতুর কিছু অংশ পানিতে ভেঙে গেছে। এছাড়াও সেতুটির উপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি।

এতে অস্থায়ী সেতুটি দিয়ে পারাপার একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর এবং জয়পুরহাট জেলার সাথে গাইবান্ধা ও বিভাগীয় শহর রংপুরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে চলমান নতুন সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে সময় লাগবে আরো কয়েকমাস। চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের মে মাসে নতুন ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা।

বর্ষা মৌসুমের আগেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় নদনদীর পানি আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় বৃদ্ধি পেয়েছে করতোয়া নদীর পানিও। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার অস্থায়ী সেতুটি ছুঁইছুঁই অবস্থায় পানি প্রবাহিত হতে থাকে। এতে নদীর উত্তরপাশ কচুরিপানায় ভরে যায়। অস্থায়ী সেতুটির নিচ দিয়ে কচুরিপানা পার হতে না পারায় পানি প্রবাহেও কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। সন্ধার আগ মুহুত্বে সেতুটি কিছু অংশ ভেঙে যায় এবং রাতে পানি সেতুটির উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ এই বেইলী ব্রিজ ভাঙার পূর্বে নদী থেকে যথেষ্ট উচুতে মজবুত অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করার কথা থাকলেও, নির্মাণাধীন নতুন ব্রিজ থেকে কয়েক ফিট নিচে নদীর পানি ছুঁইছুঁই জায়গায় নামে মাত্র নরবড়ে কাঠের সেতু নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই মানুষ পারাপার হওয়ার সময় হেলেদুলে বেড়াত সেতুটি।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলছে তারা শুধু নতুন ব্রিজ নির্মাণ করবে। অস্থায়ী বিকল্প সেতু নির্মাণের কোন চুক্তি তাদের সাথে হয়নি। নির্মাণ করা বিকল্প সেতুটি সড়ক বিভাগ নির্মাণ করেছে। এদিকে সওজ বলছে পুরাতন বেইলী ব্রিজ ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ প্যাকেজে অস্থায়ী কোন সেতু নির্মাণের কোন অনুমোদন নেই। তবুও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কথা বিবেচনায় তারা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অস্থায়ী একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছে।

এই সেতুটির উপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে তিন জেলার প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষের যাতাযাত করে। বিশেষ করে শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য রংপুরে যাতায়াত করে বড় একটি অংশ। অস্থায়ী সেতু ভেঙে যাওয়ার ফলে রংপুর কিংবা গাইবান্ধা জেলায় যাতায়াতের জন্য গোবিন্দগঞ্জ দিয়ে ঘুরে যেতে হবে। এতে দূরত্ব বাড়বে প্রায় ২৩ কিলোমিটার।

এদিকে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আখতার বলেন, ‘চলমান ব্রিজ নির্মাণ প্যাকেজে বিকল্প সেতু নির্মাণের কোন ব্যবস্থা নেই। তবুও হেটে যাতায়াতের জন্য একটি অস্থায়ী সেতু আমরা তৈরি করেছিলাম। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে দুটি নৌকা সেখানে দেয়া হয়েছে জনসাধারণের পারাপারের জন্য। একটু কষ্ট হলেও পারাপারের জন্য সকলকে নৌকা ব্যবহার করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের আগেই নদীর পানি বৃদ্ধি হলে আমাদের করণীয় কিছু থাকে না। নতুন ব্রিজের নির্মাণ কাজ ৪০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ব্রিজটির সর্বশেষ গার্ডার নির্মাণ শেষ হবে। এতে ব্রিজের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে।’

টিএইচ